করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আটকে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা আর চিরাচরিত নিয়মে হচ্ছে না; তার বদলে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা সরাসরি গ্রহণ না করে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরা দুটি পাবলিক পরীক্ষা অতিক্রম করে এসেছে। এদের জেএসসি ও এসএসসির ফলের গড় অনুযায়ী এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে।”
মন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তারা এইচএসসির চূড়ান্ত মূল্যায়ন ঘোষণা করতে চান, যাতে জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
গত ১ এপ্রিল থেকে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, যাতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর।
কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও আটকে যায়।
বছর প্রায় শেষ হয়ে আসায় এ পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ ছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যায়, তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক আর নানা পরিকল্পনা চলে।
এক্ষেত্রে জেএসসি, এসএসসির নম্বরকেও যে মূল্যায়নে আনা হতে পারে, সে ইংগিত গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক মত বিনিময় সভায় দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে পরীক্ষা যে নেওয়াই হবে না, সেই সিদ্ধান্ত বুধবারই তিনি জানালেন।
উচ্চ মাধ্যমিকের পরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের লেখাপড়ায় যায়। ভবিষ্যতে তারা কীভাবে কোন পেশায় যেতে পারবে, এ পর্যায়েই তা অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত হয়ে যায়।
ফলে এইচএসসির ফলাফল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মহামারীর এই নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম পরীক্ষা না নিয়ে বিকল্প মূল্যায়নে যেতে হচ্ছে সরকারকে।
এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “গতবার যারা ফেল করেছে, তাদেরও জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।”
উচ্চ মাধ্যমিকে একজন শিক্ষার্থীকে সাতটি বিষয়ে ১৩টি পত্রে পরীক্ষায় বসতে হয়। এর মধ্যে দুই বিষয়ে (সর্বোচ্চ চার পত্র) ফেল করলে পরের বছর শুধু ওইসব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল।
সূত্র, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম